ক্যারিয়ার হিসেবে ফ্রিল্যান্সিং কেমন?

ফ্রিল্যান্সিং কী? ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার নিয়ে কিছু কথা

বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিং শব্দটা সবার চেনা একটা শব্দ। এর অর্থ , কাজ , পরিধি অনেকে জানেন কিন্তু বেশির ভাগ মানুষ এর শাব্দিক অর্থটা জানে বা শুনেছে। আর জানলেও এইটুকুই জানে “ঘরে বসে হাজার হাজার ডলার আয় করা।“ এছাড়াও ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার নিয়ে জানার অনেক কিছু রয়েছে।

২০১৪ থেকে আমি এই বিষয়টা পরিস্কার করার জন্য বিভিন্ন জায়গায় সেমিনার শুরু করি এবং এখনও করে যাচ্ছি। অনেকেই ফোনের একটা কনভারসেশন বা সরাসরি এক /দুই ঘণ্টা আলোচনা করেই বিষয়টা বুঝে ফেলতে চায় এবং ফ্রিল্যান্সার হতে চায়।

যারা শুধু বিষয়টা জানার জন্য জানতে চান তাদেরকে সংক্ষেপে বোঝানো যায়। কিন্তু কেউ যদি ফ্রিল্যান্সার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চায় তাহলে তাকে অনেক কিছু জানতে ও বুঝতে হবে। তখন আমার সেমিনারটা ৬-৭ ঘণ্টার হয়ে যায়।

আমরা আমাদের বেসিক পড়ালেখার ১২ বছর শেষ করে তারপর একটা নির্দিষ্ট পেশার জন্য পড়া লেখা শুরু করি। সেই পড়ালেখা বা পেশায় পৌঁছাতে কারো তিন/চার/পাঁচ /ছয় বছর লেগে যায়। হোক সেটা সামরিক বাহিনী কিংবা ডাক্তার কিংবা ইঞ্জিনিয়ার কিংবা ব্যাংকার কিংবা বিসিএস ক্যাডার বা অন্য কোন পেশাজীবী।

যে কোন পেশাজীবী তার নির্দিষ্ট পেশাতে ভালো করতে হলে তাকে দক্ষতা অর্জন করতে হয়। প্রচুর পরিশ্রম করতে হয়। রিক্সা ওয়ালা থেকে ব্যবসায়ী কাউকেই পাবেন না বিনা দক্ষতায় বা পরিশ্রমে আয় করছেন।কিছু ব্যতিক্রমকে আমি এই আলোচনায় আনছি না। কারণ ফ্রিল্যান্সিং সেই ব্যতিক্রম বিষয়গুলোর মধ্যে পড়ে না।

 ফ্রিল্যান্সার হতে হলে আপনাকে দক্ষতা অর্জন করতে হবে। সেটা যে বিষয়ের উপরই হোক না কে। হতে পারে সেটা ওয়েব ডেভেলপার, গ্রাফিক্স ডিজাইনার, ইমেইল মার্কেটার, ইউ আই ডিজাইনার, এসইও এক্সপার্ট, অ্যাপ ডেভেলপার, কনটেন্ট রাইটার, একাউন্টিং ইত্যাদি হাজার হাজার কাজ আছে যার মাধ্যমে আপনাকে দক্ষতা অর্জন করতে হবে। এমনকি আপনি যদি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটারও হতে চান তাও আপনাকে সেই বিষয়ে দক্ষ হতে হবে।

এখন আসুন কিভাবে দক্ষ হবেন। দক্ষ হওয়ার জন্য আপনাকে ঐ বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করতে হবে। সেটার জন্য শিক্ষার কোন নির্দিষ্ট মানদন্ড নেই। এখানেই অন্যসব পেশার চাইতে ফ্রিল্যান্সিং পেশার সবচেয়ে বড় সুযোগ। এই পেশার মাধ্যমেই আপনি অনেক ভালো আয় করতে পারবেন যদি নিজেকে সেইভাবে দক্ষ করে নামতে পারেন।

দক্ষতা অর্জন করার জন্য অনেক মাধ্যম রয়েছে। প্রথম হলো আপনার এতদিনের যত অভিজ্ঞতা আছে তা দিয়ে যদি কাজে লাগাতে পারেন সেটা সবচেয়ে উত্তম। এরপরও যদি না হয় তা হলে নিজের ভালো লাগে এমন একটা বিষয়ে শিখে নেওয়া। শিখতে কতদিন লাগবে আর কতটা দক্ষ হবেন এটা সম্পূর্ণ নির্ভর করবে আপনার নিজের উপর। নিজে যদি সৎ না হোন তাহলে কোন কাজেই সফল হবেন না।

ফ্রিল্যান্সিং দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠার কারণ গুলোর মধ্যে একটা প্রধান কারণ হলো আপনার দক্ষতা ও যোগ্যতাকে কাজে লাগিয়ে ঘরে বসেই আয় করতে পারছেন। আবার নিজের কাজের জন্য নিজেই সময় নির্ধারণ করতে পারছেন। প্রচুর বাংলাদেশী ফ্রিল্যান্সার এবং অ্যাফিলিয়েট মার্কেটার আছেন যাদের আয়ের পরিমাণ শুনলে আপনারা বিশ্বাস নাও করতে পারেন। কিন্তু তাদের এই সাফল্যের পিছনে আছে কঠিন পরিশ্রম, অভিজ্ঞতা, দক্ষতা, এবং ধৈর্য্য।

তাই যারা ভাবেন ফ্রিল্যান্সিং অতি সহজ, কয়েকদিনের একটা কোর্স করেই সফল হয়া যায় সেটা বিরাট ভুল ধারণা। অন্যসব খেটে খাওয়া পেশার মতো এটাও একটা পেশা। এটাকে কেউ খুব সহজ মনে করলে চরম ভুল করবেন।

Leave a Comment