আমার দৃষ্টিতে স্বপ্নের দেশ ২২ । পোষা প্রাণী

পোষা প্রাণী প্রীতি ও চিড়িয়াখানা

 আমেরিকানদের পোষা প্রাণীর জন্য অন্যরকম অনুভূতি। ওদের কাছে পোষা প্রাণী সন্তানের সমতূল্য। তাদের জন্য আছে পেট শপ, পেট রেস্টুরেন্ট, পেট হোটেল, পেট পার্লার। টিভিতে ওদের পেট নিয়ে অনেক শো, নিউজ দেখেছি। ওরা ওদের পোষা প্রাণী (কুকুরের) ক্যান্সারের জন্য অনুদান পায়, পায় হাজারো সহনাভূতি সম্পন্ন চিঠি।

আমাদের এ্যাপার্ট্মেন্টের অনেকের পোষা প্রাণী ছিলো। যার মধ্যে বেশির ভাগই ছিলো কুকুর। ওরা তাকে নিয়ে সকালে বা বিকেলে হাঁটতে বের হতো। প্রায় সময় দেখা যেত আমরা সবাই একই লিফটে উঠেছি। 

কুকুরের গা মাঝে মাঝে ভিজা থাকলে সে ঝাঁকি দিয়ে তা ঝেড়ে ফেলত। আর সেই পানি আমাদের গায়ে পড়ত। কুকুরের পানি গায়ে পড়ার ফলে ঐ কাপড়ে আমাদের নামাজ হতো না। বাসায় গিয়ে সেগুলো পরিবর্তন করতে হতো।  আবার কুকুর প্রায়ই গা চাটতে চলে আসত। 

সেজন্য আমরা যখন দেখতাম ওরা কুকুর নিয়ে লিফটে ঢুকেছে তখন আমরা উঠতাম না। ওরা নেমে যাবার পর আমরা উঠতাম।  ওরা ব্যাপারটা বুঝতে পারত এবং খুব মাইন্ড করত। ভাবত আমরা মনে হয় তাদের পোষা প্রাণীকে মানতে পারছি না। 

প্রাণী প্রীতি

আমাদের পরিবারের সবাই পশু পাখী প্রিয় মানুষ। কুকুর, বিড়াল আমার বাচ্চাদের খুব প্রিয়। দেশে আমার বাচ্চারা বাসায় বিড়াল, খোরগোশ পুষত। শুধু ঘরে কুকুর রাখার ব্যাপারে আমাদের ধর্মীয় আদেশের ব্যাপারে আমরা সচেতন। তারাতো আর আমাদের ধর্মীয় অনুভূতি বুঝবে না। আমাদের বুঝেও কিছু করার ছিলো না। ওরা স্মোক ফ্রি হাউজ করে তবে পেট ফ্রি হাউজ করে না। একেকজনের অনুভূতির ধরণ একেকরকম।

চিড়িয়াখানা

আমার ছেলের চিড়িয়াখানা দেখার অনেক শখ। তাই ওদেরকে নিয়ে ওয়াশিংটন ডিসির স্মিথসোনিয়ান ন্যাশনাল জু’তে গেলাম। মেট্রোতে করে গেলাম। এই মেট্রো স্টেশন অনেক উপরে। নিচে নামার জন্য বিশাল এস্ক্যালেটর। নিচ থকে উপর দেখা যায় না। এর উচ্চতা ১১৫ ফুট। ওয়াশিংটন ডিসির লম্বা এস্ক্যালেটরগুলো মধ্যে এটা একটা। এত নিচে সত্যি অবাক করার মত। 

মেট্রো স্টেশন থেকে বের হয়ে হেটেঁ পৌঁছালাম স্মিথসোনিয়ান চিড়িয়াখানায়। বিশাল চিড়িয়াখানা, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন, কোন গন্ধ নেই। কিন্তু মন ভরল না কেননা প্রতিটা পশু পাখি ভিন্ন ভিন্ন ঘরে রাখা। দেখতে হলে একেকটা ঘরে ঢুকতে হয় তারপর দেখতে হয়। হয়ত ওদের বরফের কারণে এই রকম ব্যবস্থা। আমার মনে হলো আমাদের চিড়িয়াখানায় যদি গন্ধটা নিয়ন্ত্রণ করতে পারতো তাহলে আমাদের চিড়িয়াখানা শ্রেষ্ঠ হতো। ওখানে সাদা পান্ডা আর সাদা ময়ূর খুব ভালো লেগেছে। নতুন অনেক ধরণের প্রাণী দেখেছিলাম, যাদের নাম এখন মনে নেই।

Leave a Comment