মেরুজ্যোতি বা অরোরা কি ।অরোরা কিভাবে হয় এবং কোথায় দেখা যায়?

আমার চোখে দেখা শ্রেষ্ঠ মেরুজ্যোতি বা অরোরা

কলমেঃ তামান্না মহুয়া

অরোরা বা মেরুজ্যোতি: বায়ুমণ্ডলের ৬০ থেকে ১৫০ মাইল উচ্চতায় অবস্থিত অক্সিজেনের সাথে সূর্য থেকে ছুটে আসা প্রচন্ড গতির চার্জড পার্টিকেলের সংঘর্ষের ফলে এই সবুজ আলোর সৃষ্টি হয়। তবে অরোরার আলোর রং সবুজ না হয়ে বেগুনি বা নীল রংয়েরও হতে পারে। নাইট্রোজেন গ্যাসের সাথে সংঘর্ষের ফলে বেগুনি বা নীল অরোরার সৃষ্টি হয়। এই অরোরা দেখার জন্য শীত প্রধান দেশে বহু দূর দূরান্ত থেকে পর্যটক আসে।

মেরুজ্যোতি বা অরোরা দেখার সবচেয়ে ভালো সময় সেপ্টেম্বরের শেষের দিক থেকে এপ্রিলের প্রথম দিকে । প্রফেশনালরা এক , দু’ মাসের জন্য নর্থ সাইডে প্রচন্ড শীতের মধ্যে তাবু করে বসবাস করে শুধু অপূর্ব অরোরার নাচ রেকর্ড করার জন্য। অরোরা যখন হয় তখন এটার ব্যাপ্তিকাল নির্দিষ্ট নয়, কখন ও কখনও ১০ -১৫ মিনিট কখনও বা কয়েক ঘন্টা।

অরোরা

আমরা অরোরা দেখার জন্য অরোরা ফরকাস্ট অ্যাপ ব্যবহার করে থাকি। আমি গত ৩ বছর যাবত আরোরা শিকারের জন্য রাত বিরাতে কত কত জায়গায় ঘুরে বেড়িয়েছি তার কোন ইয়াত্তা নেই। আলহামদুলিল্লাহ, এ বছরের মতো এতো ভয়ংকর** সুন্দর অরোরা আমি আর আগে কখনো সচক্ষে দেখিনি। আমাকে কষ্ট করে কোথাও যাওয়া লাগে নি, এবার আমার বাসার উপর অরোরা নেচে ছিল বহু বার।

কানাডাতে অনেক জায়গায় শুধু অরোরা দেখার জন্য পর্যটন স্থান হিসেবে জনপ্রিয় এবং তা অনেক ব্যয়বহুল। ব্যয়বহুল হলেও সেখানে পর্যটকের অভাব হয় না। অনেক আগে থেকে বুকিং দিয়ে না রাখলে আপনি নির্দিষ্ট দিনে কোথাও থাকার জায়গা পাবেন না। সৌন্দর্য পিপাসু মানুষের কাছে ব্যয়ের চাইতে মরুজ্যোতি দেখতে পাওয়াটা বিশাল ব্যাপার।

কানাডা তে বেশীর ভাগ সময় আকাশে সবুজ, বেগুনি, লাল, হলুদ, গোলাপী রং আসে অরোরা রুপে। ফিনল্যান্ডে কদাচিৎ সাদা রংয়ের অরোরা দেখা যায়। অরোরা দেখার জন্য আকাশ মেঘ মুক্ত থাকা চাই। কানাডিয়ানরা খুব সৌখিন আরোরা দেখার ব্যাপারে। বহু রাত তীব্র শীতের মধ্যে মাইনাস তাপমাত্রায় বরফের উপর তাবুতে রাত জেগে চলে এক ঝলক অরোরা দেখার অপেক্ষায়। কানাডা, নরওয়ে, সুইডেন, ফিনল্যান্ড, রাশিয়া, আলাস্কা অরোরা উপভোগ করার জন্য সবচেয়ে ভালো স্থান।

মেরুজ্যোতি

মেরুজ্যোতি বা অরোরা নিয়ে প্রাচীনকাল থেকে অনেক উপকথা চালু ছিল। যেমন নর্স উপকথা অনুসারে আরোরা হল ঈশ্বরের সৃষ্টি সেতু। আবার কিছু কুসংস্কারচ্ছন্ন মানুষ আছে যারা মনে করেন তাদের পূর্বপুরুষেরা আকাশে নাচানাচি করে তাই আকাশের রং বদলে যায়। আরো একটা প্রবাদ চালু আছে : “Don’t whistle “ -It was also dangerous to tease them by waving, whistling, or singing under them, as this would alert the lights to your presence.

Source: গুগল উইকিপিডিয়ায়

Leave a Comment