ফ্রিল্যান্সার হতে হলে নূন্যতম যোগ্যতা কী?
ফ্রিল্যান্সিং একটা পেশা। এখানেও অন্যান্য চাকুরীর মত কিছু যোগ্যতা থাকা প্রয়োজন। জনপ্রিয় এই বিষয়টা নিয়ে সবার মনে অনেক প্রশ্ন। তেমন একটা প্রশ্ন ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য ফ্রিল্যান্সারের যোগ্যতা কী থাকা উচিত?
শিক্ষাগত যোগ্যতা
শিক্ষাগত যোগ্যতা বলতে আপনার ধরাবাঁধা সে রকম কোন ডিগ্রির প্রয়োজন নেই। কিন্তু আপনার পড়া লেখা থাকতে হবে সেটা যে কোন মাধ্যমেরই হতে পারে। একেবারে অক্ষরজ্ঞানহীন, কিংবা কোনমতে একটু পড়তে পারে তাদের জন্য ফ্রিল্যান্সিং নয়।
যেহেতু ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য প্রধান মাধ্যম হলো কম্পিউটার তাই কম্পিউটারের উপর সাধারণ জ্ঞান থাকতে হবে। যেমন ধরুন এম এস ওয়ার্ড, এক্সেল, পাওয়ার পয়েন্ট এই রকম কিছু বেসিক জ্ঞান।
ফ্রিল্যান্সিং এ যেখানে কাজ পাওয়া যায় তাকে মার্কেটপ্লেস বলে। সেই মার্কেটপ্লেসে কাজগুলোর বর্ণনা থাকে ইংরেজিতে। আপনার কাজটা ডেলিভারী করা, ক্লায়েন্টের সাথে কনভারসেশন করা সব কিছুই করতে হবে ইংরেজীতে। তাই ইংরেজীর উপর মোটামুটি একটা ভালো জ্ঞান থাকা দরকার।
এই কয়েকটা যোগ্যতা আপনার আছে, এরপর কী দরকার? সেটা হলো আপনার নিজের কাজের দক্ষতা।
স্কিল বা দক্ষতা
অর্থাৎ কোনধরনের কাজ নিয়ে আপনি এগুতে চান। সে বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করতে হবে। আপনি যদি ইংরেজীতে খুব ভালো হয়ে থাকেন তাহলে এটাকেই কাজে লাগিয়ে আপনি একজন ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কাজ শুরু করে দিতে পারেন।
আপনার ইংরেজীর দক্ষতা নিয়ে আপনি হতে পারেন একজন রাইটার, হতে পারেন একজন ট্রান্সলেটর, হতে পারেন একজন লেকচারার, হতে পারেন একজন ট্রেইনার, হতে পারেন একজন প্রুফ রিডার, হতে পারেন বুক রিভিউয়ার, হতে পারেন একজন ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট, হতে পারেন একজন ইমেইল মার্কেটার, হতে পারেন একজন কনটেন্ট মার্কেটার, হতে পারেন একজন ইন্টারপ্রেটর। এই রকম প্রচুর সুযোগ রয়েছে এই একটি স্কিল নিয়ে।
এই ইংরেজীর জ্ঞান বা দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে অনেক কিছু করা যায়। আপনি যদি টেক নিয়ে তেমন আগ্রহ না থাকে তাহলে এই বিষয়টা নিয়ে এগুতে পারেন। যদি আপনার নিজের এই বিষয়ে জ্ঞান থাকে তাহলে যে কোন সময়েই আপনি নিজের এই অসাধারণ জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে ফ্রিল্যান্সার হিসেবে আয় করতে পারেন।
আর যদি এই বিষয়ে আপনার কোন জ্ঞান না থাকে তাহলে বলবো ফিল্যান্সার হওয়ার আগে ইংরেজীর উপর কিছু দিনের কোর্স করে নিন। এটা লাগবেই। আর এই জ্ঞানটা শুধু ফ্রিল্যান্সার হওয়ার জন্যই নয় সারাজীবন প্রতিটি পদক্ষেপে কাজে লাগবে।
অনলাইন অফলাইন সব জায়গায় প্রচুর কোর্স পাবেন ইংরেজী ল্যাংগুয়েজের উপর। আপনার পছন্দ ও সুবিধামত যে কোন একটি কোর্স করে নিজেকে এই ভাষার উপর দক্ষ করে তুলুন। সারাজীবনের জন্য এই জ্ঞান আপনার জন্য অমূল্য সম্পদ হয়ে থাকবে। এই একটা জ্ঞান বা স্কিল দিয়ে যত ধরণের ফ্রিল্যান্সিং কাজ করা যায় আর কোন মাধ্যমে এত কাজ করার সুযোগ আছে কিনা তা আমার জানা নেই।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ফ্রিল্যান্সারের যোগ্যতা
ফ্রিল্যান্সিং কাজের জন্য সবচেয়ে বড় যোগ্যতাটা কী জানেন? সবচেয়ে বড় যোগ্যতা হলো ধৈর্য্য। ধৈর্য্যের অভাবে অনেক ফ্রিল্যান্সার কালেই ঝরে পড়ে। এখানে নামার আগে আপনাকে বুঝতে হবে আপনি এখানে প্রতিযোগিতা করছেন পুরো বুষ্বের সাথে। প্রতি মূহুর্তে আপনার প্রতিযোগী বাড়ছে। সুতরাং ধৈর্য্য সহকারে আপনাকে কাজের জন্য এপ্লাই করে যেতে হবে আর অপেক্ষা করতে হবে।
ফ্রিল্যান্সিং সংক্ষিপ্ত কোন রাস্তা নেই। পরিশ্রমের বিকল্প নেই। এই পেশায় আসার আগে ফ্রিল্যান্সাদের অভিজ্ঞতা গুলো পড়ুন। দেখুন কেউই অতি সহজে সাফল্যের মুখ দেখতে পায়নি। কারোর লেগেছে তিন মাস, কারোর বা ছয়মাস, কারোর একবছর ও লেগেছে প্রথম কাজটা পেতে।
যারা ধৈর্য্য ধরে লেগে ছিলো, বার বার ধাক্কা খেয়েছে আবার উঠে দাঁড়িয়েছে তারই সফলতার মুখ দেখতে পেয়েছে। শুধু ফ্রিল্যান্সিং এর কথা কেন জীবনের প্রতিটা কাজের ক্ষেত্রেই একই নিয়ম। কারো ভাগ্য সুপ্রসন্ন হলে সেটা সম্পূর্ণ ভিন্ন কথা। ফ্রিল্যান্সারের যোগ্যতার পাশাপাশি নিজের ইচ্ছে এবং কাজের প্রতি আগ্রহ ও শ্রদ্ধা থাকলে আপনিও হয়ে উথতে পারবেন একজন সফল ফ্রিল্যান্সার।
Source: https://prothomkagoj.com/%e0%a6%ab%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a6%bf%e0%a6%b2%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a6%be%e0%a6%a8%e0%a7%8d%e0%a6%b8%e0%a6%be%e0%a6%b0-%e0%a6%b9%e0%a6%a4%e0%a7%87-%e0%a6%b9%e0%a6%b2%e0%a7%87-%e0%a6%a8%e0%a7%82/