কোন কোন দিক বিবেচনায় নিয়ে ফ্রিল্যান্সিং এ যাত্রা শুরু করবেন? গত পাঁচ পর্ব থেকে জেনে গেছেন ফ্রিল্যান্সিং কী, ফ্রিল্যান্সার কারা, তারা কি ধরণের কাজ করে, কোথায় করে, কিভাবে করে, কিভাবে আয় করে, এবং কিভাবে তাদের আয়ের টাকা উত্তোলন করে থাকে। সে ধারাবাহিকতায় আজ জানাব ফ্রিল্যান্সারদের কী কী সর্তকতা অবলম্বন করতে হবে এবং সেই আলোকে কিছু দরকারী পরামর্শ।
ফ্রিল্যান্সারদের জন্য কিছু টিপস:
১। ধৈর্য্য হারাবেন না। আপনাকে মনে রাখতে হবে আপনি এখানে সারা দুনিয়ার সবার সাথে প্রতিযোগিতা করছেন। প্রথম কাজ পেতে সবারই একটু সময় লাগে। কারো তিন মাস, কারো ছয় মাস, কারো বা একবছর ও লেগে যায়। তাই এখানে কাজ করার মনস্থির করলে ধৈর্য্য ধরতে হবে।
২। প্রথমে অল্প মূল্যের কাজে বিড করুন, পরে ধীরে ধীরে বেশি মূল্যের কাজে বিড করুন।
৩। নিজের স্কিলের বাহিরে কোন কাজে বিড করবেন না। নিজে যে কাজে দক্ষ সেই ধরণের কাজে মনোনিবেশ করুন। বেশি টাকার কাজ দেখেই সে কাজের জন্য বিড করে ভুল করবেন না।
হয়ত মনে হতে পারে যে আপনার পরিচিত কাউকে দিয়ে কাজটা করিয়ে জমা দিয়ে দেবেন। প্রথম দুই একটা হয়ত এভাবে করতে পারবেন কিন্তু এই ভাবে বেশি দিন মার্কেটপ্লেসে টিকতে পারবেন না।
স্কিলের বাহিরে বেশিদিন টিকে থাকা মুশকিল।
৪। ডুপ্লিকেট একাউন্ট করা থেকে বিরত থাকুন।
৫। একটা পিসি বা একটা ল্যাপটপে একটা একাউন্টেই কাজ করুন। একাধিক একাউন্ট ব্যবহার করলে আপনার সব একাউন্টগুলো ব্যান হয়ে যেতে পারে।
৬। একাউন্ট করার সময় যে ব্যাংক একাউন্টের মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করতে চান সেখানে যেভাবে নাম দিয়ে একাউন্ট করেছেন ঠিক সেই ভাবেই নাম দিয়ে মার্কেটপ্লেসে একাউন্ট করুন।
৭। ক্লায়েন্ট বা বায়ারের সাথে পজিটিভ আচরণ করুন। তাদের কাছ থেকে ভালো রিভিউ নেওয়ার চেষ্টা করুন। কারণ অনেক সময় ক্লায়েন্ট জবে ফ্রিল্যান্সারের রিভিউ মেনশন করে দেয়। তাছাড়া বায়ার কোন ফ্রিল্যান্সারকে কাজ দেওয়ার আগে তার রিভিউ চেক করে নেয়।
একবার একটা খারাপ রিভিউ পেলে আপনার আগের অনেকগুলো ৫ স্টার রিভিউগুলো মিলে তা গড়ে অনেক নিচে নেমে যায়। আর একবার রিভিউ নেমে গেলে তা আগের পর্যায়ে ফিরিয়ে আনতে অনেক সময় লেগে যায়।
যদিও খারাপ রিভিউ পেলে তা রিমুভ করার উপায় হচ্ছে টাকাটা ফেরত দিয়ে দেওয়া। টাকা ফেরত দিলে রিভিউটা রিমুভ হয়ে যায়। কিন্তু অনেক সময় এমন হয় যে টাকাটা ফেরত দেওয়ার অবস্থায় থাকে না। রিভিউ দেওয়া নেওয়াটা দ্বিপাক্ষিক।
৮। জবে বিড করার আগে ক্লায়েন্টের প্রোফাইলও চেক করে নিন। তিনি কেমন কাজ অফার করেন, কাজ দেবার রেকর্ড কেমন, লেনদেনের রেকর্ড, ক্লায়েন্ট হিসেবে কেমন রিভিউ পেয়েছেন এগুলো দেখে কাজে বিড করবেন।
৯। কাজ পাওয়ার আগে কখনো কাজ শুরু করবেন না। বিশ্বাসযোগ্য না হলে মার্কেটপ্লেসের বাহিরে কাজ করবেন না। নতুন হলে একদমই না। যদি ক্লায়েন্টের সাথে অনেক দিনের সম্পর্ক হয়ে থাকে তাহলে তার সাথে আপনি মার্কেটপ্লেসের বাহিরেও কাজ করতে পারেন।
১০। ধীরে ধীরে আপনার আওয়ারলী রেট বৃদ্ধি করুন।
১১। দীর্ঘ দিন আপনার প্রোফাইল নিস্ক্রিয় করে রাখবেন না। মার্কেটপ্লেস যেমন ভালো চোখে দেখে না ক্লায়েন্ট ও ভালোভাবে নেয় না। অনেক মার্কেটপ্লেস দীর্ঘদিন নিস্ক্রিয় থাকা প্রোফাইলকে ডিজএবেল করে দেয়।
১২। নিজে সৎ থাকুন, কাজে নিষ্ঠা বজায় রাখুন। মনে রাখবেন সততাই সর্ব উৎকৃষ্ট পন্থা।
*হ্যাপি ফ্রিল্যান্সিং*