একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের দৈনিক ৩০গ্রাম ভিটামিন সি প্রয়োজন। যদি কেউ দিনে ২টি আমলকী খায় তবে তার ভিটামিন সি এর দৈনন্দিন চাহিদা পূরণ করে। শুধু ফল হিসেবেই নয়, আমলা দিয়ে আপনি টক, মিষ্টি বা মোরব্বার মতো বিভিন্ন ধরনের আচারও তৈরি করতে পারেন। এখন চলুন দেখে নেই কিভাবে তৈরি করতে পারেন সুস্বাদু আমলকীর আচার।
আমলকী বাংলাদেশে সব জায়গায় পাওয়া যায়। এটি ভিটামিন সি এর বড় উৎস। আমলাতে পলিফেনল নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা ক্যান্সার প্রতিরোধক। আমলা চোখ ও চুলের জন্য অনেক উপকারী। এটি হজমে সাহায্য করে। আমলকী শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, লিভার দূষণ প্রতিরোধ এবং কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে এবং ডায়াবেটিসের জন্যও উপকারী।
ভারত ও চীনে প্রাচীনকাল থেকেই আমলাকে ঔষধি ফল হিসেবে ব্যবহার করে আসছে। ভারতের অন্যতম ভেষজ ওষুধ চ্যবনপ্রাশের প্রধান উপাদান হল আমলা। চীনারা কয়েক শত বছর ধরে গলার প্রদাহ নিরাময়ে এই ফলটি ব্যবহার করে আসছে। সম্প্রতি চুলের শ্যাম্পু, ফেসিয়াল স্ক্রাব এবং ত্বকের বিভিন্ন পণ্য তৈরিতে আমলা ব্যবহার করা হচ্ছে।
আমলকীর আচার বানাতে যা যা লাগবে
- ১ কাপ সরিষার তেল
- ৫০০ গ্রাম আমলা বা আমলকী
- ২ টেবিল চামচ সরিষা বাটা
- ২ টেবিল চামচ রসুন বাটা
- ১ টেবিল চামচ পাঁচ ফোঁড়ন
- ১ টেবিল চামচ ফিটকিরি
- ১ চা চামচ লবণ
- ১ চা চামচ মরিচের গুঁড়া
- ৬/৭ টা শুকনো মরিচ
- ২ টেবিল চামচ চিনি
- ১ টেবিল চামচ আদা বাটা
- ১ টেবিল চামচ রসুন বাটা
- ১/২ কাপ ভিনেগার
- ১ চা চামচ হলুদ গুঁড়ো
কিভাবে বানাবেন আমলা আচার
একটি ছুরি বা কাঁটাচামচ বা টুথপিক দিয়ে দিয়ে আমলকীগুলো কেঁচে নিন।
আমলকীকে ফিটকিরির পানিতে ৮-১০ ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখুন। ২-৩ ঘণ্টা পর পানি পরিবর্তন করুন। ফিটকিরির পানি থেকে আমলা বের করে ২ থেকে ৩ বার পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
লবণ দিয়ে পানি গরম করুন। পানি ফুটে উঠলে ফুটানো পানিতে আমলা দিন। ১০ মিনিট পরে নামিয়ে ফেলুন। ফুটন্ত পানি থেকে আমলা তুলে রাখুন।
কড়াইতে তেল গরম দিন। তেল গরম হলে রসুন বাটা দিয়ে হালকা ভাজুন। এরপর একে একে আদা বাটা, হলুদ গুঁড়া, মরিচ গুঁড়া, শুকনা মরিচ, সরিষার বাটা, এবং লবণ যোগ করুন এবং ভাজুন।
তারপর ভিনেগার এবং চিনি দিয়ে দিন। চিনি গলে গেলে মিশ্রণে সেদ্ধ আমলকি দিয়ে দিন। মাঝে মাঝে নাড়ুন। ১০ মিনিট পর আমলকীর উপর পাঁচ ফোড়নের গুঁড়া ছিটিয়ে দিন। নেড়ে ৫ মিনিট পর চুলা বন্ধ করুন।
আচার ঠান্ডা হলে একটি বয়ামে সংরক্ষণ করুন। আপনি এই আমলকীর আচার সারা বছর খেতে পারবেন। আমলা আচার ভাত বা পোলাউয়ের সাথে পরিবেশন করুন।
টিপস: আচার তৈরিতে চিনির পরিবর্তে গুড় ব্যবহার করতে পারেন। ব্যবহারের আগে গুড় গলিয়ে নিন।