ডিজনি ওয়ার্ল্ড ভিজিট-Magic Kingdom
সকালে ঘুম থেকে উঠে রওয়ানা হলাম বুকিং কোম্পানীর সেমিনারে। কোম্পানীর পক্ষ থেকে খুব সুন্দরভাবে আমাদের অভ্যর্থনা জানিয়ে ভিতরে নিয়ে গেল এবং সাথে মজার ব্রেকফাস্টও করালো। অনেক সুন্দর পরিবেশ। প্রচুর লোক দেখতে পেলাম। এক দম্পতি ছিলো যাদের ৫০তম বিবাহ বার্ষিকী ছিলো। তাদের জন্যও স্পেশাল আয়োজন করলো।
প্রথমে আসল ব্যাপারটা বোধগম্য হলো না। এবার এলো আসল কথায়! ওদের কিছু হোটেল বিক্রি করছে ওগুলো নিয়ে দেখাল। কেনার জন্য অনেক রকমের খাতির আপ্যায়ন করল। শেষে যখন বুঝালাম আমরা এখানকার স্থানীয় না এবং আমরা এটা কিনতে পারব না, তখনই ওদের মুখটা কালো হয়ে গেল এবং মুহুর্তেই আতিথেয়তায় ভাটা পড়ে গেল। হোটেল বুকিং কোম্পানীর মাধ্যমে হোটেল বিক্রির ব্যবসা। তাও কত ছলচাতুরি! নতুন এক রকমের ব্যবসায়িক পদ্ধতি দেখলাম। অভিজ্ঞতার ঝুলিতে নতুন সংযোজন।
ফ্ল্যাট না কেনায় আয়োজকদের অনেক মন খারাপ দেখে আমাদেরও একটু মন খারাপ হলো। তবে হোটেলের ব্যাপারটা সমাধান হলো।
সেখান থেকে বের হয়ে পার্ক Magic Kingdom এর উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিলাম। আগের দিন তেমন শীতের কাপড় নিয়ে যাইনি কিন্তু বেশ ভালো শীত ছিল। তাই আজ শীতের কাপড় বেশি করে নিয়ে গেলাম কিন্তু শীত তেমন ছিল না। পুরো এলাকাটা এত বড় যে একদিনে দেখে শেষ করা যায় না।
আমাদেরকে ফেরীতে করে মূল পার্কে নিয়ে গেল আবার ফেরার পথে মনোরেলে করে নিয়ে এলো। ম্যাজিক কার্পেট আলাদিন,পাইরেটস অব ক্যারবিয়ান, স্প্ল্যাশ মাউন্টেইন, বিগ থান্ডার মাউন্টেইন রেইলরোড, স্নো হোয়াইট, টুমরোল্যান্ড স্পীডওয়ে, স্পেস মাউন্টেইন এমন অনেক ধরণের রাইড, শো, ক্যাসেল ছিল। সব রাইডগুলো অনেক মজার ছিল।
সবচেয়ে সুন্দর ছিল সিনড্রেলা ক্যাসেল, যেটা ডিজনির সিম্বল। দিনের বেলায় এই ক্যাসেলের সৌন্দর্য একরকম আর রাতের বেলায় আরেকরকম। রাতের বেলায় একেকবার একেক রং এর হয়ে যায়। অপরূপ তার সৌন্দর্য। নির্দিষ্ট সময় পর পর প্যারেড হয়, বিভিন্ন রকমের ক্যারেক্টার সেজে প্যারেড করে। খোলা জায়গায় প্যারেড করে, রাস্তার দুপাশে দাঁড়িয়ে সবাই দেখে। যা দারুণ উপভোগ্য।
রাত ৯ টায় শুরু হয় আতশবাজি (Fireworks)। সিন্ড্রেলা ক্যাসেলের উপর আতশবাজি দেখার জন্য সবাই পার্কের সামনে দাঁড়িয়ে থাকে। আমার দেখা সবচেয়ে সুন্দর আতশবাজি ডিজনির এই আতশবাজি। পার্কের একটা অংশে কৃত্রিম তুষারপাত হয়। সব মিলিয়ে অন্যরকম একটা সৌন্দর্য। প্রচুর মানুষের ভিড় হয়। কিন্তু সবাই খুব সুশৃঙ্খলভাবে দাঁড়িয়ে তা উপভোগ করে।
বাচ্চাদের মনের আনন্দ দেখলে বাবা মার আনন্দ দ্বিগুণ হয়ে যায়। তাদের আনন্দ আর ক্লান্তিকে সাথে নিয়ে হোটেলে ফিরে এলাম। পার্কে ঘুরতে হলে সারাদিন প্রচুর হাঁটাহাঁটি করতে হয়। তাই বিশ্রামও প্রয়োজন।