ফ্রিল্যান্সারদের কাজের জায়গা এবং কাজের বিবরণ-৩

নিজেকে ফ্রিল্যান্সিং পেশার জন্য উপযুক্ত করে গড়ে তুলেছেন অর্থাৎ আপনি প্রস্তুত ফ্রিল্যান্সার হওয়ার জন্য। এবার আপনাকে কাজ পাওয়ার জন্য চেষ্টা করতে হবে। চলুন জেনে নেই ফ্রিল্যান্সারদের কাজের জায়গা এবং কাজগুলো কিভাবে, কোথায় পাওয়া যায় এবং কিভাবে করে থাকেন।

আমরা আমাদের পড়ালেখার পাট চুকিয়ে চাকুরীর জন্য বিভিন্ন জায়গায় দরখাস্ত করি তেমনি ফ্রিল্যান্সিং এর কাজের জন্যও দরখাস্ত করতে হয়। তবে তা করতে অনলাইনে। 

যদি আপনি এই লেখার নিয়মিত পাঠক না হয়ে থাকেন তবে আগের পর্বগুলোতে একটু চোখ ভুলিয়ে আসলে ফ্রিল্যান্সিং নিয়ে প্রাথমিক ধারণা পেয়ে যাবেন। 

ফ্রিল্যান্সাররা যেখানে কাজ করেন এবং ক্লায়েন্ট বা বায়াররা যেখানে কাজের বিজ্ঞাপন দিয়ে থাকেন সেই স্থানকে মার্কেটপ্লেস বা কাজের জায়গা বলা হয়। অনলাইনে এমন বিভিন্ন ধরণের প্রচুর মার্কেটপ্লেস রয়েছে। যেখান থেকে ফ্রিল্যান্সাররা তাদের কাজ খুঁজে পায়। আর ক্লায়েন্টরা তাদের উপযুক্ত ফ্রিল্যান্সার খুঁজে পায় যাদের দ্বারা কাজ করিয়ে নেয়। এই মার্কেটপ্লেসগুলো ফ্রিল্যান্সার এবং ক্লায়েন্টের মধ্যে একটা সেতু বা মেলবন্ধন হিসেবে কাজ করে থাকে। 

এই মার্কেটপ্লেসগুলো বিভিন্ন ধরণের হয়ে থাকে। কোন কোন মার্কেটপ্লেস বিশেষ কোন ক্যাটাগরি যেমন ধরুন ওয়েব ডিজাইন কিংবা গ্রাফিক ডিজাইন কিংবা রাইটিং এমন স্পেশাল ক্যাটাগরির জন্য হয়ে থাকে। আবার কিছু মার্কেটপ্লেস আছে যেখানে সব ধরণের কাজ পাওয়া যায়।

কাজের ধরনের উপরও বিভিন্ন ধরনের মার্কেটপ্লেস রয়েছে। যেমন মাইক্রোসাইট মার্কেটপ্লেস, ছোট বাজেটের মার্কেটপ্লেস, বড় বাজেটের মার্কেটপ্লেস। 

মাইক্রোসাইট মার্কেটপ্লেসের কাজগুলো করা অনেক সহজ। প্রতিটি কাজ কিভাবে করতে হবে তা কাজেই বর্ণ্না করা থাকে। যে কেউ চাইলেই এই ধরণের কাজগুলো করতে পারেন। এই কাজগুলো করার জন্য তেমন কোন দক্ষতার প্রয়োজন হয় না। কাজের বর্ণনা পড়ে বোঝার ক্ষমতা থাকলেই হলো। কাজটা কিভাবে করতে হয় তা ধারাবাহিকভাবে বর্ণনা করা থাকে। এখানে একাউন্ট বা প্রোফাইল তৈরি করাও অনেক সহজ।

 তবে যেহেতু এইগুলো মাইক্রোসাইট তাই কাজ যেমন সহজ ও ছোট, এর মূল্য অনেক কম। সাধারণত ৫ সেন্ট থেকে কাজ শুরু হয়ে থাকে। সর্বোচ্চ ৩-৫ ডলার পর্যন্ত হয়। সারা দিনে যার যত খুশি তত কাজ করতে পারে। প্রতিটা কাজ সংখ্যা নির্দিষ্ট করা থাকে। অর্থাৎ যদি একটা কাজের সংখ্যা ৫০ দেওয়া থাকে সেটা ৫০ পূরন হওয়ার সাথে সাথে কাজটা মার্কেটপ্লেস থেকে চলে যায়। তাই দেখা যায় প্রতি ঘণ্টায় নতুন নতুন কাজ আসতে থাকে। সেজন্য কাজের প্রচুর সুযোগ রয়েছে।

ছোট বাজেটের মার্কেটপ্লেস বলতে প্রতিটি কাজের জন্য সর্বনিম্ন একটা রেট দেওয়া থাকে। হতে পারে সেটা ৫ ডলার কিংবা ১০ ডলার। অর্থাৎ কমপক্ষে ৫ ডলার দিয়ে কাজ শুরু হয়। তবে এর মানে এই নয় যে সেইসব মার্কেটপ্লেসে শুধু এই বাজেটের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে। এখানেও অপরিসীম আয়ের সুযোগ আছে। সেইরকম জনপ্রিয় একটা মার্কেটপ্লেস হলো ফাইভার।

এইসব মার্কেটপ্লেসগুলোতে একাউন্ট করার কিছু বিশেষ নিয়ম আছে। সেগুলো ফলো করে একউন্ট করা জরুরী। তা না হলে দেখা যাবে আপনার কিছু ভুল বা অজানার জন্য আপনার প্রোফাইল ঠিকম্ত বায়ারের কাছে পৌঁছাচ্ছে না এবং আপনি কাজ পাচ্ছেন না। ফাইভার একাউন্ট করার নিয়মগুলো জেনে প্রোফাইল বানালে আপনার কাজ পাওয়ার সম্ভবনা দ্বিগুণ হয়ে যায়।

বড় বাজেটের মার্কেটপ্লেসে সাধারনত বড় বড় কাজের জন্য। যারা একেবারে নতুন তাদের প্রথমেই এই মার্কেটপ্লেসে কাজ না করে ছোট ছোট মার্কেটপ্লেসে কাজ শুরু করা উচিত। আর যারা নিজের কাজের স্কিল নিয়ে কনফিডেন্ট শুধু জানতেন না কোথায় কাজে লাগাবেন তারা চাইলেই প্রথমেই বড় ধরণের মার্কেটপ্লেসগুলোতে একাউন্ট তৈরী করতে পারেন।

জনপ্রিয় তেমনি একটি সাইট হলো আপওয়ার্ক। এখানে প্রোফাইল তৈরির কিছু টিপস এন্ড ট্রিকস আছে যা জেনে নিলে আপনার জন্যই মঙ্গল। বড় বা ছোট যেখানে কাজ করার সিদ্ধান্ত নেন না কেন অবশ্যই নিয়মকানুনগুলো ভালো করে জেনে কাজে নামবেন। য্বেকোন মার্কেটপ্লেসে একবার প্রোফাইল ব্লক হয়ে গেলে আর ঐ মার্কেটপ্লেসে আপনার ঐ আইডি দিয়ে একাউন্ট করতে পারবেন না। তাই সবসময় সর্তকতার সহিত এগুবেন।

*হ্যাপী ফ্রিল্যান্সিং

Leave a Comment